الخميس، 27 سبتمبر 2018

How I Found Islam - Anthony (Abdurraheem) Green - YouTube

BE POSITIVE (Why YOU Think Negative) By Abdurraheem Green - YouTube

Hip Hop with sheikh Khalid Yasin....FUNNY.... - YouTube

Khalid Yasin " Why I left Christianity" - YouTube

ตัฟซีร อรรถาธิบายสูเราะฮฺ อัศ-ศ็อฟ - ไทย - ซุฟอัม อุษมาน

ตัฟซีร อรรถาธิบายสูเราะฮฺ อัศ-ศ็อฟ - ไทย - ซุฟอัม อุษมาน: อธิบายสูเราะฮฺ อัศ-ศ็อฟ และบทเรียนต่างๆ ที่ถอดได้จากสูเราะฮฺ ประกอบด้วยเนื้อหาทั้งหมด 5 ตอน ว่าด้วยการแนะนำกับบรรดาผู้ศรัทธาให้พวกเขาทำตามที่พวกเขาพูด และไม่สมควรพูดในสิ่งที่ไม่ได้ตั้งใจจะปฏิบัติจริง อีกทั้งได้ยกตัวอย่างจากประชาชาติในอดีตเพื่อเป็นอุทาหรณ์แก่พวกเขา สรุปท้ายด้วยคำสอนที่จะบอกว่าพวกเขาควรทำอย่างไรเพื่อให้ประสบความสำเร็จทั้งในโลกนี้และโลกหน้า

SCURT GHID ILUSTRAT, PENTRU A ÎNŢELEGE ISLAMUL

SCURT GHID ILUSTRAT, PENTRU A ÎNŢELEGE ISLAMUL:

SCURT GHID ILUSTRAT, PENTRU A ÎNŢELEGE ISLAMUL

Ruqayyah bint Muhammad | About Islam

Ruqayyah bint Muhammad | About Islam: Ruqayyah bint Muhammad was the second daughter of Prophet Muhammad (SAW). This is her story!

Waspada Dengan Teman-teman Perempuan (Pacar) - islamqa.info

Waspada Dengan Teman-teman Perempuan (Pacar) - islamqa.info: Apakah berteman dengan teman wanita berpacaran akan mempunyai dampak buruk terhadap masyarakat

Hadith - Chapters on Supplication - Jami` at-Tirmidhi - Sunnah.com - Sayings and Teachings of Prophet Muhammad (صلى الله عليه و سلم)

Hazrat Ali RA Ki Qabar Chupa K Kyun Banai Gai By Raza Saqib Mustafai 2018 - YouTube

سب الدين

Um cumprimento abençoado - Português

Um cumprimento abençoado - Português: Neste áudio falou-se sobre um cumprimento abençoado que é: Assalamu Âleikum.

The Impact Of Tawbah - Powerful | About Islam

The Impact Of Tawbah - Powerful | About Islam: We all need to repent to Allah. When we make proper Tawbah to Allah, it is like we are born again. The impact of Tawbah is very powerful.

O contro da zanga - Português

O contro da zanga - Português: Neste áudio falou-se sobre a zanga, os seus prejuizos e soluções.

ইখলাসের অপরিহার্যতা ও হজ কবূলে তার প্রভাব - বাংলা - সালেহ আস-সিন্দী

ইখলাসের অপরিহার্যতা ও হজ কবূলে তার প্রভাব - বাংলা - সালেহ আস-সিন্দী: এ প্রবন্ধে শাইখ সালেহ সিন্দী হাফেযাহুল্লাহ দীনের মধ্যে ইখলাসের গুরুত্ব কী তা তুলে ধরেছেন। তারপর তিনি হজে ইখলাসের প্রয়োজনীয়তার কথা আলোচনা করেছেন। তাছাড়া যেসব বিষয় ইখলাস বিনষ্ট করে সেগুলোর প্রতিও আলোকপাত করেছেন।

La súplica y sus beneficios - Español - Muhammad Isa Garcia

La súplica y sus beneficios - Español - Muhammad Isa Garcia: Jutba sobre la súplica y sus beneficios. Las condiciones previas para que la súplica sea aceptada y las causas que pueden hacer que las súplicas no sean aceptadas

شرح حديث لا يزني الزاني حين يزني وهو مؤمن - عربي - ابن تيمية

شرح حديث لا يزني الزاني حين يزني وهو مؤمن - عربي - ابن تيمية: رسالة لشيخ الإسلام ابن تيمية - رحمه الله - شرح فيها حديث: {لاَ يَزْنِي الزَّانِي حِينَ يَزْنِي وَهُوَ مُؤْمِنٌ، وَلاَ يَشْرَبُ الخَمْرَ حِينَ يَشْرَبُها وَهُوَ مُؤْمِنٌ، وَلاَ يَسْرِقُ السَّارِقُ حِينَ يَسْرِقُ وَهُوَ مُؤْمِنٌ، وَلاَ يَنْتَهِبُ نُهْبَةً ذاتَ شرفٍ، يَرْفَعُ النَّاسُ إِلَيْهِ فِيهَا أَبْصَارَهُمْ، وَهُوَ حين ينتهبها مُؤْمِنٌ}.

When was the beginning of Islam? - Hindi - Muhammad Salih Al-Munajjid

Rregullat e pastërtisë - Shqip

Rregullat e pastërtisë - Shqip: Në këtë artikull bëhet fjalë për disa rregulla të pastërtisë, siç janë llojet e ujërave, pastrimi nga ndyrësia, përdorimi i enëve dhe rregullat e kryerjes së nevojës.

Man Becomes Muslim After Ex-EDL Leader Appears on TV With the Qur'an - IlmFeed

Is it backbiting to tell others about my husband’s unjustice? - Q&A - Abdur-Raheem Green

Is it backbiting to tell others about my husband’s unjustice? - Q&A - Abdur-Raheem Green: If your husband is unjust, can you tell other people about his behaviour in order to solve the problem? Listen to Abdur-Raheem Green’s advice.

What is the responsibility of the Muslims for others who are suffering? - Q&A - Sh. Saeed al-Gadi

What is the responsibility of the Muslims for others who are suffering? - Q&A - Sh. Saeed al-Gadi: We see that the Ummah is suffering. What should Muslims do when others are suffering? Listen to Sheikh Saeed al-Gadi's answer.

আশুরাকে ঘিরে ইসলামী আদর্শ ও জাহিলি কীর্তিকলাপ



আশুরাকে ঘিরে ইসলামী আদর্শ ও জাহিলি কীর্তিকলাপ
 



আব্দুল আযীয ইবন মারযুক তারিফী


অনুবাদক : সানাউল্লাহ নজির আহমদ
সম্পাদনা : ড. আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া



عاشوراء بين هدي الإسلام وهدي الجهلاء
(باللغة البنغالية)
 


عبد العزيز بن مرزوق الطريفي


ترجمة: ثناء الله بن نذير أحمد
مراجعة: د/ أبو بكر محمد زكريا



সংক্ষিপ্ত বর্ণনা.............
আশুরা ইসলামে একটি সম্মানিত দিন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হিজরতের পূর্বে ও পরে এ দিনের সাওম পালন করতেন। কারণ, এ দিনে আল্লাহ তাআলা মূসা আলাইহিস সালাম ও তার জাতিকে ফিরআউনের কবল থেকে রক্ষা করেছিলেন। এটিই হচ্ছে এ দিনের মর্যাদার মূল কথা। কিন্তু শিয়ারা এ দিনে যেসব অনুষ্ঠান ও কর্মকাণ্ড করে থাকে তা কখনো ইসলামে অনুমোদিত নয়। আলোচ্য প্রবন্ধে লেখক তা বিস্তারিত আলোচনা করেছেন।




 আশুরাকে ঘিরে ইসলাম আদর্শ ও জাহিলি কীর্তিকলাপ
সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্যই, আমি তার যথাযোগ্য প্রশংসা করছি এবং সালাত ও সালাম প্রেরণ করছি তার বান্দা ও নবীর পর। অতঃপর,
আশুরার দিনটি ইসলামে মহাসম্মানিত একটি দিন। এই দিনে হিজরতের পূর্বে ও পরে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সিয়াম পালন করতেন। তার সিয়াম ছিল আল্লাহ তাআলার নিআমতের শুকরিয়াস্বরূপ কারণ, আল্লাহ এই দিনে মসা আলাইহিস সালামকে ফিরআউনের কবল থেকে মুক্তি দিয়েছেন। এটিই আশুরার শ্রেষ্ঠত্বের গোড়ার ঘটনাএ কারণেই অন্যান্য দিনের পর তার মর্যাদা
ইসলাম উত্তর জাহিলি যুগে এই দিনটিতে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সিয়াম রাখতেন, মক্কায় কুরাইশরা এবং মদিনার ইয়াহূদীরাও সিয়াম রাখতসহীহ বুখার’ ও ‘সহীহ মুসলিম’ গ্রন্থে ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: “রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদিনায় এসে আশুরার দিনে ইয়াহূদীদের সিয়াম রাখতে দেখেন, তিনি বলেন: ‘এটি কোন দিন, তোমরা যার সিয়াম রাখ?’ তারা বলল: ‘এটি মহাসম্মানিত দিন, এই দিনে মূসা ও তার কওমকে আল্লাহ নাজাত দিয়েছেন এবং ফিরআউন ও তার কওমকে ডুবিয়ে মেরেছেন ফলে, সা তার শুকরিয়াস্বরূপ সিয়াম রেখেছেন, আমরাও তার সিয়াম রাখি’ তিনি বললেন: ‘তোমাদের চাইতে আমরাই মূসার অধিক ঘনিষ্ঠ ও যোগ্য অনুসারী’তারপর থেকে তিনি তাতে সিয়াম রাখেন ও তার সিয়াম রাখার নির্দেশ দেন এবং অধিক গুরুত্ব হেতু তার সিয়াম রাখা তিনি ফরয করেন, যা রমযানের সিয়াম ফরয হওয়ার আগেকার ঘটনা, পরবর্তীতে যখন রমযানের সিয়াম ফরয হয়, তার বিধান রহিত হয়ে যায়, তবে কয়েকটি কারণে আজও তার ফযীলত অন্যান্য সিয়ামের পর বহাল আছে:
. একাধিক নবী যুগযুগ ধরে আশুরার সিয়াম রেখেছেন। উল্লেখ্য যে, ইমাম আহমদ ইবন হাম্বল এর ‘মুসনাদ’ গ্রন্থে একটি বর্ণনা এসেছে, যার অর্থ হচ্ছে, ‘মসার পূর্বেকার যুগেও আশুরার সিয়াম রাখা হত’ সেটি বিশুদ্ধ নয়।
জ্ঞাতব্য যে, বন ইসরালের জন্য ঈসা আলাইহিস সালামকে প্রেরণ করা হয়েছিল, মসার কওম তথা ইয়াহূ সম্প্রদায় থেকে যে তার অনুসরণ করে নি ও তার প্রতি ঈমান আনে নি সে কাফির। যেমন, আব্দুল্লাহ ইবন সালাম নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে আসার আগে কাফির ছিল কারণ, সে ঈসা আলাইহিস সালামের অনুসরণ করে নি। ‘সহীহ মুসলিম’ গ্রন্থে ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন:
«حِينَ صَامَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَوْمَ عَاشُورَاءَ وَأَمَرَ بِصِيَامِهِ قَالُوا: يَا رَسُولَ اللهِ إِنَّهُ يَوْمٌ تُعَظِّمُهُ الْيَهُودُ وَالنَّصَارَى فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «فَإِذَا كَانَ الْعَامُ الْمُقْبِلُ إِنْ شَاءَ اللهُ صُمْنَا الْيَوْمَ التَّاسِعَ» قَالَ: فَلَمْ يَأْتِ الْعَامُ الْمُقْبِلُ، حَتَّى تُوُفِّيَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ».
“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন আশুরার সিয়াম রাখেন ও তার সিয়াম রাখার নির্দেশ দেন, তখন সাহাবীগণ বললেন: ‘হে আল্লাহর রাসূল, এই দিনটিকে তো ইয়াহূদী ও নাসারারা সম্মান করে’! তিনি বললেন: ‘যখন আগামী বছর হবে, ইনশাআল্লাহ আমরা নবম দিনেও সিয়াম রাখবো’ ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা বলেন: ‘আগামী বছর আসতে পারে নি, তার আগেই তিনি মারা গেছেন”[1]
. রমযানের পূর্বে আশুরার সিয়াম ফরয ছিল। এই বৈশিষ্ট্য আশুরার সিয়াম ছাড়া কোনো সিয়ামের নেই, তবে যখন রমযান মাসের সিয়াম ফরয হয়, তিনি সাহাবদের আশুরার সিয়াম রাখার নির্দেশ করা ত্যাগ করেন, যদিও সিয়ামের প্রতি তার গুরুত্ব ও আগ্রহ ছিল। ‘সহীহ বুখারীতে ইবন র রাদিয়াল্লাহু আনহুমা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
«صَامَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَاشُورَاءَ، وَأَمَرَ بِصِيَامِهِ فَلَمَّا فُرِضَ رَمَضَانُ تُرِكَ ذلك»
“নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আশুরার দিন সিয়াম রাখেন ও তার সিয়াম রাখার নির্দেশ দেন, কিন্তু যখন রমযান ফরয হয়, তিনি সেটি ত্যাগ করেন[2] এই হাদীস বলে, আশুরার ফরয বিধান রহিত, তবে তার মস্তাহাব বিধান এখনো বাকি আছে
. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মানুষদেরকে আশুরার সিয়াম রাখার ঘোষণা দিতে লোক পাঠিয়েছেন। আশুরা ও রমযান ব্যতীত ফরয বা নফল কোনো সিয়ামের জন্যেই তিনি এরূপ করেন নি‘সহীহ বুখারী’ ও ‘সহীহ মুসলিম’ গ্রন্থদ্বয়ে রুবাইয়্যে‘ তনয়া মুআউওয়্যিয থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ আশুরার সকালে আনসারদের পল্লীতে, যারা মদিনার আশেপাশে ছিল, সংবাদ পাঠালেন যে,
«مَنْ كَانَ أَصْبَحَ مِنْكُمْ صَائِمًا فَلْيُتِمَّ صَوْمَهُ، وَمَنْ كَانَ أَصْبَحَ مِنْكُمْ مفطراً فَلْيُتِمَّ بَقِيَّةَ يَوْمِهِ»
তোমাদের থেকে যে সিয়াম অবস্থায় ভোর করেছে সে যেন তার সিয়াম পূর্ণ করে, আর যে সিয়াম না রাখা অবস্থায় ভোর করেছে সে যেন তার অবশিষ্ট দিন পূর্ণ করে[3]
তারপর থেকে আমরা সিয়াম রাখি ও আমাদের ছোট বাচ্চাদের দ্বারা সিয়াম অনুষ্ঠান করি। আমরা তুলা দিয়ে খেলনা বানিয়ে বাচ্চাদের জন্য মসজিদে রেখে দিতাম। যখন তাদের কেউ খাবারের জন্য কাঁদত, তাকে সেই খেলনা দিয়ে ভুলিয়ে রাখতাম যতক্ষণ না সে ইফতারে উপনীত হত অপর বর্ণনায় এসেছে,
«فَإِذَا سَأَلُونَا الطَّعَامَ، أَعْطَيْنَاهُمُ اللُّعْبَةَ تُلْهِيهِمْ حَتَّى يُتِمُّوا صَوْمَهُمْ».
“যখন তারা আমাদের কাছে খাবার চাইত, আমরা তাদের খেলনা দিয়ে ভুলিয়ে রাখতাম যতক্ষণ না তারা তাদের সিয়াম পূর্ণ করত”[4]
আশুরার সিয়ামের ফযীলত:
আশুরার সিয়ামের ফলে বিগত এক বছরের পাপ মোচন হয়। ইমাম মুসলিম তার ‘সহীহ মুসলিম’ গ্রন্থে আবূ কাতাদা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণনা করেন: জনৈক ব্যক্তি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে আশুরার সিয়াম সম্পর্কে জিজ্ঞেস করল, তিনি বললেন:
«أَحْتَسِبُ عَلَى اللهِ أَنْ يُكَفِّرَ السَّنَةَ الَّتِي قَبْلَهُ»
আল্লাহর নিকট আশা করছি যে, তিনি পূর্বেকার এক বছরের গুনা মাফ করবেন”[5]
‘আরাফার সিয়াম ছাড়া আশুরার সমতুল্য কোনো নফল সিয়াম নেই। আরাফার সিয়াম পূর্বেকার ও পরবর্তী বছরের পাপের কাফফারা। যে আরাফা ও আশুরার সিয়াম রাখল, সে বিগত বছরের পাপ মোচন করার দুটি উপকরণ জমা করল, তাই সে অন্যদের চেয়ে বেশিই পাপ মোচন নিশ্চিত করল আর সিয়ামে অনুষ্ঠেয় খোদ আমলের সাওয়াব তো আছেই, যেমন ইস্তেগফার করা, যা সিয়ামের ধারক তুলনামুলক বেশিই আঞ্জাম দেয়, যদিও সত্যিকার তাওবা একবার ইস্তেগফার দ্বারাই কবুল হয়। কিন্তু শরী‘আত প্রণেতা ইস্তেগফার, আরাফা ও আশুরার সিয়ামের পাপ মোচন করার ভূমিকা একটু বেশি স্পষ্ট করেছেন, তাদের অন্যান্য ফযীলত সেরূপ স্পষ্ট করেন নি, কারণ পাপ কল্যাণকে দূরে ঠেলে দেয় ও বিপদকে কাছে টেনে আনে। যেমন কতক মনীষী বলেছেন: “কোনো মুসবতই পাপ ছাড়া আসে নি”। অতএব, যখন বান্দা থেকে পাপ দূর হবে তখন অমনি তার অনিষ্ট ও কু-প্রভাব দূর হবে। পাপের অনিষ্ট দূর হলে তার জায়গায় প্রতিস্থাপন হবে কল্যাণ ও বরকত। এই জন্যে শরী‘আত উপকরণ যথা সিয়ামের দিকে বেশি নজর দিয়েছে, যেরূপ নজর দেয় নি তার ফল ও সাওয়াবের দিকে, কারণ সিয়াম রাখা হলে সেটি হাসিল হবেই। শরীআতের সকল অধ্যায় থেকে এই নীতি স্পষ্ট হয়
৪. নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অন্যান্য সিয়াম থেকে আশুরার সিয়ামে মনোযোগ বেশি দিয়েছেন, বরং তিনি আশুরা ও রমযানকে সমান গুরুত্ব দিয়ে অন্বেষণ করেছেন, যেমন সহীহ বুখারীতে ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন:
«ما رَأَيْتُ النَّبِي - صلى الله عليه وسلم - يَتَحرَّى صِيام يَومٍ فَضَّلَهُ على غَيرهِ إِلا هذَا اليوم يومَ عَاشُوراءَ وَهذا الشهرَ يعنِي شَهْرَ رَمضانَ».
আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে দেখি নি ফযীলত বর্ণনা করার পরও আশুরা ও রমযানের ন্যায় কোনো সিয়াম অন্বেষণ করেছেন”।[6] অর্থাৎ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আশুরা ও রমযানের ন্যায় অনেক সিয়ামের ফযীলত বর্ণনা করেছেন, তবে গুরুত্ব দিয়ে অন্বেষণ করেছেন আশুরা ও রমযানের সিয়াম।
. সাহাবগণ আশুরার সিয়ামে বেশি আগ্রহী ছিলেন, তার নির্দেশ করতেন ও ছুটে যাওয়ার আশঙ্কায় থাকতেন, যেমন ইবন জারির তার “তাহযিব” গ্রন্থে আসওয়াদ থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেছেন:
«ما أدركت أحداً من أصحاب رسول الله - صلى الله عليه وسلم - كان آمر بصوم عاشوراء من علي وأبي موسى».
“আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাহাবীদের মধ্য থেকে আলী ও আবূ মুসার ন্যায় কাউকে আশুরার সিয়াম রাখার নির্দেশ করতে দেখি নি”।[7]
আব্দুর রহমান ইবন আউফ সম্পর্কে বর্ণিত, তিনি দিনের প্রথম প্রহরে উপনীত হয়েও আশুরা জানতে পারেন নি, অতঃপর জেনে ঘাবড়ে যান! তিনি সিয়ামের নিয়ত করেন ও আমাদের সিয়াম রাখার নির্দেশ দেন”
সাহাব ও তাবঈদের উল্লিখিত বাণী ও ঘটনাবলি সহীহ সূত্রে বর্ণিত।
আশুরা ও তার পূর্বের দিন সিয়াম রাখা সুন্নত, যেন ইয়াহূদী ও নাসারাদের সাথে সামঞ্জস্য না হয়। কারণ, তারা শুধু আশুরায় তথা দশ তারিখে সিয়াম রাখে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামও প্রথম দশ তারিখে সিয়াম রাখতেন, অতঃপর তাদের সামঞ্জস্য পরিহার করার জন্যে তার পূর্বের দিনও সিয়াম রাখার নির্দেশ দেন, যেমন সহীহ গ্রন্থে হাকাম ইবন আরাজ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন:
«انْتَهَيْتُ إِلَى ابْنِ عَبَّاسٍ- رَضِيَ اللهً عَنْهُمَا - وَهُوَ مُتَوَسِّدٌ رِدَاءَهُ فِي زَمْزَمَ فَقُلْتُ لَهُ: أَخْبِرْنِي عَنْ صَوْمِ عَاشُورَاءَ! فَقَالَ: إِذَا رَأَيْتَ هِلَالَ الْمُحَرَّمِ فَاعْدُدْ وَأَصْبِحْ يَوْمَ التَّاسِعِ صَائِمًا. قُلْتُ: هَكَذَا كَانَ رَسُولُ اللهِ - صلى الله عليه وسلم - يَصُومُهُ؟ قَالَ: نَعَمْ»
আমি ইবন আব্বাসের নিকট গিয়ে পৌঁছলাম, তখন তিনি যমযমের পাশে চাদর জড়িয়ে ছিলেন, আমি বললাম: আমাকে আশুরার সিয়াম সম্পর্কে বলুন। তিনি বললেন: ‘যখন তুমি মহররমের চাঁদ দেখ হিসেব কর ও নবম তারিখ সিয়াম রাখ’আমি বললাম: ‘এভাবেই কি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সিয়াম রাখতেন’? তিনি বললেন: ‘হ্যাঁ”[8]
এই হাদীস থেকে স্পষ্ট হলো যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামই নয় ও দশ তারিখের সিয়াম অনুমোদন দিয়েছেন কারণ, দশ তারিখকে “আশুরা” বলা হয়, নয় তারিখকে বলা হয় ‘তাসুআ’ ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা নয় তারিখ সিয়াম রাখার নির্দেশ দিয়েছেন, কারণ আশুরার সিয়াম প্রশ্নকর্তার জানা ছিল
সাহাবী ও অন্যান্য পূর্বসূরি আশুরা ও তার পূর্বের দিন সিয়াম রাখতেন। ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা, ইবন সিরিন প্রমুখ থেকে এরূপ বর্ণিত। মুহাম্মদ ইবন সিরিন শুধু দশ তারিখে সিয়াম রাখতেন, পরে যখন তার নিকট পৌঁছল যে, ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা নয় ও দশ তারিখ সিয়াম রাখেন, তিনিও নয় ও দশ তারিখ সিয়াম রাখা আরম্ভ করেন।
আব্দুর রায্‌যাক তার ‘মুসান্নাফ’ গ্রন্থে এবং ইমাম বায়হাকি প্রমুখ তাদের স্বস্ব গ্রন্থে ইবন জুরাইজ থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন: “আমাকে আতা বলেছেন, তিনি ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমাকে আশুরার দিন বলতে শুনেছেন:
«خَالِفُوا الْيَهُودَ وَصُومُوا التَّاسِعَ وَالْعَاشِرَ».
“তোমরা ইয়াহূদীদের বিরোধিতা কর এবং নয় ও দশ তারিখ সিয়াম রাখ”।[9]
আশুরা, আশুরার আগে ও পরে তিন দিন সিয়াম রাখার কোনো সহীহ দলল নেই। অধিকন্তু নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শুধু সামঞ্জস্য ত্যাগ করার ইচ্ছা করেছেন, সেটি নয় তারিখের সিয়াম দ্বারাই পূর্ণ হয় কোনো সাহাবী থেকে প্রমাণিত নয় যে, তিনি এগারো তারিখও সিয়াম রেখেছেন, তবে পরবর্তী কতক মনীষী থেকে বর্ণিত আছে, যেমন তাউস ইবন কায়সান প্রমুখ। ইবন আবূ শায়বাহ বর্ণনা করেন: তাউস ছুটে যাওয়ার আশঙ্কা থেকে আশুরা, আশুরার আগে ও পরে তিন দিন সিয়াম রাখতেন।
যদি কেউ শুধু দশ তারিখে সিয়াম রাখে, তার আগে ও পরে সিয়াম না রাখে, কোনো সমস্যা নেই, হ্যাঁ সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও এরূপ করা অনুত্তম। কারণ, এভাবে রাসূলের ইত্তেবা অপূর্ণাঙ্গ হয়, তবে পাপ মোচনের জন্য এতটুকু যথেষ্ট, কিন্তু কাফিরদের সামঞ্জস্য পরিহার করার সাওয়াব পাবে না। কতক মনীষী থেকে শুধু আশুরার সিয়াম রাখার প্রমাণ আছে, যেমন আব্দুর রায্‌যাক তার ‘মুসান্নাফ’ গ্রন্থে আবূ বকর ইবন আব্দুর রহমান ইবন হারিস থেকে বর্ণনা করেন: র রাদিয়াল্লাহু আনহু আশুরার রাতে আব্দুর রহমান ইবন হারিসর নিকট সংবাদ পাঠান যে, “সহর খাও ও সিয়াম রাখ, ফলে তিনি সিয়াম রাখেন”


আশুরার দিন জাহিলি কীর্তিকলাপ:
আশুরার দিন মাতম ও শোক করা, যেমন শিয়া-রাফেযীরা করে, খুব নিন্দনীয় কাজ। এটি ইসলাম সম্পর্কে তাদের কঠিন মূর্খতা ও বিবেক বর্জিত আচরণ কয়েকটি কারণে:
প্রথমত আশুরার দিন এসব অনুষ্ঠান করা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আদর্শের বিপরীত, বরং আশুরা পেয়ে খুশি হওয়া, তার আগমনে গৌরব বোধ করা, তাকে অভ্যর্থনা জানানো ও তার সিয়াম রেখে আল্লাহর শোকর আদায় করা তার সুন্নত; পক্ষান্তরে দুঃখ ও গোস্বার বহিঃপ্রকাশ, তাজিয়া মিছিল ও দেহ রক্তাক্ত করার ন্যায় কীর্তিকলাপ নি‘আমতের না শোকর ও দীনের ভেতর জঘন্য বিদ‘আত চর্চার নামান্তর, বরং শয়তানের নিকট বিবেক বিকানো ও মূর্খদের নিকট মাথা ধার দেওয়ার ন্যায় চরম বোকামি
শিয়ারা এই দিন যে কীর্তিকলাপ করে তা অন্য সাধারণ দিনেও বৈধ নয়, বরং কোনো মুসিবতেই বৈধ নয়; উপরন্তু ইবাদত ও নি‘আমতের শোকর করার দিনে, আসমান কর্তৃক নির্দিষ্ট দিনে কভাবে বৈধ হবে, যার পর চলে আসছে সকল ধর্মের অনুসারী, কি কিতাবি কি ইসলাম?
উল্লেখ্য যে, শাখা-প্রশাখাগত বিধানের ক্ষেত্রে ইসলাম অন্যান্য আসমান ধর্ম থেকে পৃথক বৈশিষ্ট্যের হলেও আশুরার ক্ষেত্রে কিন্তু সেরূপ নয়, যা আশুরার মহত্ত্ব ও সম্মানের প্রতীক দ্বিধা নেই, হয়তো এই কারণে নবীগণ ও তাদের অনুসারী কর্তৃক পরম্পরায় সম্মানিত হয়ে আসছে আশুরা এবং কিয়ামত পর্যন্ত হবে। আশুরার আরো একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য যে, যদিও আমাদের নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
«لَوْ كَانَ مُوسَى حَيًّا مَا وَسِعَهُ إِلَّا اتِّبَاعِي»
“যদি মসা বেঁচে থাকত আমার অনুসরণ ব্যতীত তার কোনো গত্যন্তর ছিল না”[10], আশুরার ক্ষেত্রে কিন্তু সেরূপ ঘটে নি, বরং আশুরার ক্ষেত্রে আমাদের নবী মসার অনুসারী। অথচ শেষ জমানায় ঈসা আলাইহিস সালাম আসবেন, তাকেও মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের শরীআত মানতে হবেএ থেকে শিয়াদের কর্তৃক একটি চূড়ান্ত আদর্শকে,সা, ঈসা ও আমাদের নবীর আদর্শকে লঙ্ঘন করার চিত্র স্পষ্ট হয়!
অধিকন্তু তাদের কীর্তিকলাপ সুস্থ বোধ ও সহীহ রুচি বিরোধী, যা মুক্ত চিন্তার বাহক ও বাস্তবধর্মী সবার সামনে স্পষ্ট হয় কয়েকভাবে:
প্রথমত সেই আদম আলাইহিস সালামের অবতরণ ও জমিনে অবস্থান করা থেকে অদ্যাবধি কেউ জানে না যে, মানব জাতির কোনো সম্প্রদায় তাদের বড় ও অনুসৃত ব্যক্তির মৃত্যুকে ঘিরে, তার মর্তবা তাদের নিকট যত মহান ও মহত্তর হোক, বুক চাপড়ায়, রক্তাক্ত হয় ও তাজিয়া বের করে শোকাহত হয়, যেমন রাফিযীরা করে! বরং ইতিহাস তো প্রমাণ করে, এমন লোকও বিগত হয়েছেন যিনি হুসাইন রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকেও উত্তম ও শ্রেষ্ঠ ছিলেন, যেমন নবী ও রাসূলগণতাদের কাউকে অন্যায়ভাবে হত্যা করা হয়েছে যেমন ইয়াহইয়াকাউকে শূলে চড়ানোর দাবি করে তার উম্মত যেমন ঈসাতাদের ছাড়াও আছে অনেক বিখ্যাত রাজা-বাদশা, প্রথিতযশা মনীষী ও পথিকৃৎ ব্যক্তিবর্গ, সত্যের অনুসারী বা মিথ্যার অনুগামী যাই হোক, তাদের মৃত্যুকে ঘিরে ক্তবৃন্দের এরূপ করার নজির নেই! বস্তুত বিবেকের তাড়না থেকে এক জাতি অপর জাতির অনুসরণ করে, এবং নিজেদের আমলকে অপরের আমল দ্বারা যাচাই করে, যদিও সেটি সবক্ষেত্রে নয়, এই মানদণ্ডেও বক ধার্মিক শিয়ারা তাদের আমল কদাচ মেপে দেখে নি কোনো দিনবিবেক অসমর্থিত পদ্ধতিতে শোক প্রকাশের জন্যে তো ধর্মীয় স্বীকৃতি প্রয়োজন, অথচ ধর্মই উল্টো তার থেকে নিষেধ করেছে কঠোরভাবে!
দ্বিতীয়ত মুশরিকেরা অন্যসব বস্তু থেকে তাদের উপাস্যের সাথে বেশিই জুড়ে থাকে, তাদের জীবন-মৃত্যু ও যাওয়া-আসা উপাস্যকে কেন্দ্র করেই সংঘটিত হয়, যেমন ছিল ইবরাহিম ও আমাদের নবীর কওমের অবস্থা। তারা উভয় মুশরিকদের উপাস্যকে ভেঙ্গে-চুরমার করে দিয়েছেন, তথাপি কোনো মুশরিক তাদের উপাস্যের জন্য সেরূপ মাতম করে না, হুসাইনের জন্যে শিয়ারা যেরূপ মাতম করে! আল্লাহ মুশরিকদের সম্পর্কে বলেছেন,
﴿يُحِبُّونَهُمۡ كَحُبِّ ٱللَّهِۖ وَٱلَّذِينَ ءَامَنُوٓاْ أَشَدُّ حُبّٗا لِّلَّهِۗ ١٦٥﴾ [البقرة: ١٦٥] 
“তারা তাদের উপাস্যকে মহব্বত করে আল্লাহকে মহব্বত করার ন্যায়, বস্তুত যারা ঈমান এনেছে তারা আল্লাহকে বেশি মহব্বতকারী”। [সূরা আল-বাকারাহ, আয়াত: ১৬৫]
আমরা নিশ্চিত জানি যে, আল্লাহ যে সংবাদ দিয়েছেন তা চিরসত্য, যদিও প্রত্যেক সংবাদ সত্য-মিথ্যার সম্ভাবনা রাখে, কিন্তু এখানে সেই সম্ভাবনা নেই কারণ, এটি গায়েবী সংবাদ হলেও তার সূত্র অহী বিধায় চূড়ান্ত সত্য; অর্থাৎ সত্যিই মুশরিকেরা তাদের উপাস্যকে আল্লাহর চাইতে বেশি মহব্বত করে, তথাপি আমরা দেখি তাদের উপাস্য ধ্বংস করার দিন তারা সেরূপ কীর্তিকলাপ করে না হুসাইনের মৃত্যুর দিন শিয়ারা যেরূপ করে! এখন ভেবে দেখতে হয়, তারা কি আসলেই সত্যবাদী, যার পশ্চাতে হুসাইনের মহব্বতকে তারা উদ্দীপকভাবে, যদিও বিবেকের নিকট তাদের ভাবনা প্রত্যাখ্যাত; না তাদের কীর্তিকলাপ বাস্তবতা শূন্য মহব্বতের মিথ্যা দাবির ওপর প্রতিষ্ঠিত? বাহ্যত প্রতিয়মান যে, তাদের মহব্বত মিথ্যা, তারা প্রবৃত্তি কর্তৃক প্রতারিত, যা অস্বীকার করার সুযোগ নেই। এভাবে তারা প্রতিপক্ষকে ক্ষেপীয়ে তুলতে চায়, ইতপূর্বে কেউ তার বিপক্ষকে যেভাবে ক্ষেপায় নি, যদিও তার দাবি ও কারণ তখনো ছিল।
অথবা বলতে হবে, শিয়াদের হুসাইনপ্রীতি আয়াতে উল্লিখিত মুশরিকদের উপাস্যপ্রীতি অপেক্ষা বেশি, যদি তাই সত্য হয়, তাহলে তো এটাই মহব্বতের শিরক এবং স্পষ্ট কুফরি! বরং মুশরিকদের চেয়েও বড় কুফুরী!!
তৃতীয়ত ইসলামে আলী রাদিয়াল্লাহু আনহুর স্থান ও মর্যাদা অনেক বেশি, বরং পরবর্তী শিয়াদের নিকট তো তিনি সকল সাহাবী থেকে উত্তম, হাসান ও হুসাইন থেকেও উত্তম, তাকেও অন্যায়ভাবে হত্যা করা হয়, যা ইসলামের অনুসারী সবার নিকট স্বীকৃত। আব্দুর রহমান ইবন মুলজিম আততায়ী কর্তৃক তিনি ৪০ হিজরিতে শহাদাত বরণ করেন, তবুও দেখি তার মৃত্যুর দিনে তার সাথী, সহপাঠী সাহাবী, এমন কি হাসান-হুসাইনও সেরূপ করে নি, হুসাইনের মৃত্যুর দিনে শিয়ারা যেরূপ করে, অথচ হুসাইন তারপর ২১ বছর বেঁচে ছিলেন তিনি তার বাবার মৃত্যুর দিনক্ষণ সম্পর্কে বেশি অবগত ছিলেন, বাবার অতি নিকটবর্তীও ছিলেন তিনি, তবুও নিজের বাবার মৃত্যুর দিন তিনি এসব কীর্তিকলাপ করেন নি বরং ৪৮ হিজরিতে তার জীবদ্দশায় সহোদর হাসান ইবন আলী মারা যান, হুসাইন তার মৃত্যুতেও এর কিছুই করেন নি, অধিকন্তু হাসানের জানাযার জন্য অপরকে যেতে বললে সায়ীদ ইবনুল আস এগিয়ে যান এবং তার জানাযার সালাত পড়ান কারণ, তাদের উভয়ের মাঝে গভীর সখ্যতা ও নিখাদ ভালোবাসা ছিল। আব্দুর রাযযাক তার “মুসাননাফ” গ্রন্থে সুফিয়ান থেকে, তিনি সালিম থেকে, তিনি আবূ হাযিম থেকে বর্ণনা করেন, আবূ হাযিম বলেন: হাসান যে দিন মারা যান সেদিন আমি উপস্থিত ছিলাম, আমি হুসাইনকে দেখেছি সাঈদ ইবন আসকে বলছেন ও ঘাড়ে টোকা দিচ্ছেন: “তুমি এগিয়ে যাও, এটা যদি সুন্নাত না হত তোমাকে এগিয়ে দিতাম না”।
উল্লেখ্য, হাসান ও হুসাইন উভয় জান্নাতের সরদার।
চতুর্থত তর্কের খাতিরে যদি মেনে নেই যে, হুসাইনের মৃত্যুর দিন শিয়াদের রক্তাক্ত হওয়া, মিছিল ও তাজিয়া বের করা, চেহারা ক্ষতবিক্ষত করা, সমবেত হওয়া প্রভৃতি বিবেক ও শরীআতের দৃষ্টিতে বৈধ, তাহলে তাকে মানদণ্ড করে আরো মানতে হয় যে, প্রত্যেক ইসলামি দলের তার মযলুম নেতার জন্যে এরূপ করা বৈধ, যাকে অন্যায়ভাবে মারা হয়েছে। যদি এটাকে মেনে নেই, তাহলে তো বছরের প্রতিটি দিন রক্তাক্তের দিনে, মিছিল ও বিলাপের দিনে পরিণত হবে, এবং তাতে প্রত্যেক দল তার অনুসারীদের আহ্বান করবে। সন্দেহ নেই এটিই সত্য থেকে বিচ্যুতি, আল্লাহর রাস্তা থেকে পদস্খলন এবং দীন-দুনিয়ার কল্যাণ থেকে নিজেকে বঞ্চিত করা বৈ কিছু নয়, যা সামান্য বিবেকেও বুঝতে সক্ষম।
কীভাবে সম্ভব, কোনো দল যদি এটাকে দীনের অংশ ও ধর্মীয় কর্ম মনে করে, তবে তো প্রত্যেকের জন্যই মাতম করা বৈধ, যে ইসলাম গ্রহণ করেছে, কারণ মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সবার নবী। আর যদি কতক আলেমের ভাষ্য মোতাবেক মেনে নেই যে, দীনের শাখা-প্রশাখার ক্ষেত্রে কাফিররাও আদিষ্ট, তবে কীভাবে সম্ভব তাদেরকে মাতম করার নির্দেশ করা?
বস্তুত শিয়াদের এসব ভ্রান্তি প্রত্যাখ্যান করার জন্যে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের একটি বাণীই যথেষ্ট, যেখানে তিনি বলেছেন:
«مَنْ أَحْدَثَ فِي أَمْرِنَا هَذَا مَا لَيْسَ مِنْهُ فَهُوَ رَدٌّ».
আমাদের এই দীনে যে এমন কিছু উদ্ভাবন করল, যা তার অন্তর্ভুক্ত নয় তা প্রত্যাখ্যাত[11]
অনুরূপভাবে কতক আলেম যে বলেন, ‘এই দিনে পরিবারে সচ্ছলতা দান করুন’, তাও সহীহ সূত্রে প্রমাণিত নয় ইমাম আহমদ প্রমুখ তার জোরালো প্রতিবাদ করেছেন।
অনুরূপভাবে আশুরার দিন গোসল করা, পরিচ্ছন্ন হওয়া, সুগন্ধি ব্যবহার করা, সুরমা লাগানো, দাড়িতে খেজাব করা প্রভৃতি ভিত্তিহীন আদর্শ কোনো মনীষী এগুলো মোস্তাহাব বলেন নি আল্লাহ ভালো জানেন।


[1] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১১৩৪।
[2] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৮৯২।
[3] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১১৩৬।
[4] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১১৩৬।
[5] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১১৬২।
[6] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২০০৬।
[7] ইবন জারীর, কানযুল উম্মাল, হাদীস নং ২৯৫১৬।
[8] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১১৩৩।
[9] মুসান্নাফে আবদুর রায্‌যাক, হাদীস নং ৭৮৩৯।
[10] বাইহাকী, হাদীস নং ১৭৬।
[11]  সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১৭১৮; ইবন মাজাহ, হাদীস নং ১৪।