যে আমল করলে জীন শয়তান ভয়ে পালিয়ে যায়:
১- রাসুল (সাঃ) বলেন, যে বেক্তি সকালে ১বার ও বিকালে ১বার আয়াতুল কুরসি পাঠ করবে, শয়তান থেকে সারাদিন সে আল্লাহ্র আশ্রয়ে থাকবে। (সহিহ তারগিব)
২- “রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন, যে ব্যক্তি সকাল ও বিকালে সূরা ইখলাস, ‘সূরা ফালাক’ ও ‘সূরা নাস’ তিনবার করে বলবে, এটাই তার সবকিছুর জন্য যথেষ্ট হবে। (আবূ দাউদ; তিরমিযী)
৩- রাসুল (সাঃ) বলেন, যে বেক্তি সকালে ৩বার ও সন্ধ্যায় ৩বার নিম্নোক্ত দুয়াটি বলবে, তাহলে কোন কিছু তার ক্ষতি করতে পারবে না। (সহিহ আবুদাউদ)
«بِسْمِ اللَّهِ الَّذِي لاَ يَضُرُّ مَعَ اسْمِهِ شَيْءٌ فِي الْأَرْضِ وَلاَ فِي السّمَاءِ وَهُوَ السَّمِيعُ الْعَلِيمُ».
(বিস্মিল্লা-হিল্লাযী লা ইয়াদ্বুররু মা‘আ ইস্মিহী শাইউন ফিল্ আরদ্বি ওয়ালা ফিস্ সামা-ই, ওয়াহুয়াস্ সামী‘উল ‘আলীম)।
“আল্লাহ্র নামে; যাঁর নামের সাথে আসমান ও যমীনে কোনো কিছুই ক্ষতি করতে পারে না। আর তিনি সর্বশ্রোতা, মহাজ্ঞানী।”
৪- “রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন : পেশাব পায়খানার স্থানে জিন শয়তান থাকে। অতএব তোমাদের কেহ যখন এখানে আসে সে যেন বলে,
اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْخُبْثِ وَالْخَبائِث».
আল্লা-হুম্মা ইন্নী আ‘ঊযু বিকা মিনাল খুব্সি ওয়াল খাবা-ইস
হে আল্লাহ! আমি আপনার নিকট অপবিত্র পুরুষ জিন্ ও নারী জিন্ থেকে আশ্রয় চাই”। (ইবনে হিব্বান, বুখারী, মুসলিম)
এছাড়াও “রাসূলুল্লাহ (সাঃ) গর্তে পেশাব করতে নিষেধ করেছেন কারণ গর্ত হল জিনদের থাকার জায়গা”।
(সহীহ্-আবু দাউদ)
৫- “রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন : “যখন তোমাদের কেউ ঘরে প্রবেশ করে, আর প্রবেশের সময় ও খাবারের সময় আল্লাহকে স্মরণ করে, তখন শয়তান (নিজ ব্যক্তিদের) বলে, তোমাদের কোনো বাসস্থান নেই, তোমাদের রাতের কোনো খাবার নেই।” (মুসলিম)
অর্থাৎ খাওয়ার সময় ও ঘরে প্রবেশের সময় বলতে হবে-
«بِسْمِ اللَّهِ»
(বিসমিল্লাহ) “আল্লাহর নামে।”
৬- রাসুল (সাঃ) বলেন : যে ব্যক্তি শোয়ার সময় আয়াতুল কুরসী পড়বে শয়তান সারা রাত তার নিকটে যাবে না।(বুখারী)
৭- রাসুল (সাঃ) বলেন : যখন তোমাদের কেউ হাই তোলে তখন সে যেন তার মুখে হাত দিয়ে বাধা দেয়। কারণ হাই তোলার সময় শয়তান প্রবেশ করে”।(মুসলিম)
ছোট শিশুদের কিভাবে জীন শয়তান থেকে নিরাপদে রাখা যায়:
১- রাসুল (সাঃ) বলেন : সন্ধ্যা বেলায় তোমাদের সন্তানদের বাহিরে যাওয়া থেকে বিরত রাখবে। কারণ, তখন শয়তানেরা ছড়িয়ে পড়ে। (বুখারী)
২- রাসূলুল্লাহ (সাঃ) হাসান ও হুসাইন রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা-এর জন্য এই বলে (আল্লাহ্র) আশ্রয় প্রার্থনা করতেন-
«أُعِيذُكُمَا بِكَلِمَاتِ اللَّهِ التَّامَّةِ مِنْ كُلِّ شَيْطَانٍ وَهَامَّةٍ، وَمِنْ كُلِّ عَيْنٍ لاَمَّةٍ».
(উ‘ইযুকুমা বিকালিমা-তিল্লা-হিত তা-ম্মাতি মিন কুল্লি শাইতানিওঁয়া হা-ম্মাহ্, ওয়ামিন কুল্লি আইনিল্লা-ম্মাহ্)।
“আমি তোমাদের দু’জনকে আল্লাহ্র পরিপূর্ণ কালেমাসমূহের আশ্রয়ে নিচ্ছি যাবতীয় শয়তান ও বিষধর জন্তু থেকে এবং যাবতীয় ক্ষতিকর চক্ষু (বদনযর) থেকে।”(বুখারী)
৩- রাসুল (সাঃ) বলেন : নিম্নোক্ত দোয়া পাঠ করে সহবাস করলে উক্ত সহবাসের ফলে সৃষ্ট সন্তানের কোন ক্ষতি শয়তান করতে পারে না”।(বুখারী, আবু দাউদ, তিরমিযী)
«بِسْمِ اللَّهِ، اللَّهُمَّ جَنِّبْنَا الشَّيْطَانَ، وَجَنِّبِ الشَّيْطَانَ مَا رَزَقْتَنَا».
(বিসমিল্লাহি আল্লা-হুম্মা জান্নিবনাশ্-শাইত্বানা ওয়া জান্নিবিশ্-শাইত্বানা মা রযাকতানা)।
“আল্লাহ্র নামে। হে আল্লাহ! আপনি আমাদের থেকে শয়তানকে দূরে রাখুন এবং আমাদেরকে আপনি যে সন্তান দান করবেন তার থেকেও শয়তানকে দূরে রাখুন।”
জিন-শয়তান কাউকে আছর করলে করণীয়:
এটা প্রমাণিত যে, কেউ যদি উপরে বর্ণিত আমলগুলো করে তবে জিন-সয়তান তার কোন ক্ষতি করতে পারবে না কিন্তু কেউ এই আমলগুলো না করার কারণে যদি জিন-সয়তান পাকড়াও করে ফেলে তবে আয়াতুল কুরসি, সূরা ফালাক, সূরা নাস দিয়ে ঝার ফুক করলে জীন-শয়তান চলে যাবে ইন-শা-আল্লাহ। কাউকে বিষধর জন্তু বা সাপে কাটলে সূরা ফাতিহা পড়ে মুখের থুথু কাটা জায়গায় লাগাবে এভাবে কয়েকবার করলে সুস্থ হয়ে যাবে ইন-শা-আল্লাহ।(বুখারি, মুসলিম)। আর ১ জনের মাধ্যমে যদি অন্যজনের নজর লাগে তবে যে বেক্তির জন্য নজর লাগলো তাকে গোসল করিয়ে সেই গোসলের পানি নজর লাগা অসুস্থ বেক্তির গায়ে পিছন দিক থেকে ঢেলে দিলে সে সুস্থ হয়ে যাবে। আর কার মাধ্যমে নজর লাগলো এটা বুঝা না গেলে ঐ সুরাগুলো দ্বারা ঝার-ফুক করতে হবে। ইসলামে প্রত্যেক রোগের চিকিৎসা রয়েছে, অথচ মানুষ এগুলো গ্রহণ না করে তন্ত্র-মন্ত্র বা তাবিজ-কবজের আশ্রয় নেয়। শরিয়ত সম্মত এই পদ্ধতিগুলো অবলম্বন করুণ, কেননা তন্ত্র-মন্ত্র বা তাবিজ-কবজের আশ্রয় নেওয়া শির্ক। (মুসনাদে আহমাদ, সিলসিলাহ সহিহাহ)
---------------------------------
উত্তর প্রদানে:
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
عرض الترجمة
ليست هناك تعليقات:
إرسال تعليق