~~ হুদহুদের জ্ঞান ও সূর্যপূজারীরা ~~
এখন আমরা সেই সুন্দর পাখিটি সম্পর্কে আলোচনা করব যার কথা কুরআনে উল্লেখ হয়েছে। পাখিটি রাণী শিবা'র (সাবা'র রানী) রাজ্য দেখে আসার পর সুলাইমান এর কাছে ফিরে রিপোর্ট করে। এটি তার বিশ্লেষণ:
إِنِّي وَجَدتُّهَا وَقَوْمَهَا يَسْجُدُونَ لِلشَّمْسِ مِن دُونِ اللَّهِ وَزَيَّنَ لَهُمُ الشَّيْطَانُ أَعْمَالَهُمْ فَصَدَّهُمْ عَنِ السَّبِيلِ فَهُمْ لَا يَهْتَدُونَ
তারা আল্লাহর পরিবর্তে সূর্যের উপাসনা করছে। শয়তান সফলভাবে তাদের কর্মকাণ্ডকে তাদের কাছে সুন্দর করে তুলেছে। অর্থাৎ, এই জঘন্য উপাসনা কর্মটিকে একটি সাজানো কাজে পরিণত করা হয়েছে আর তারা মনে করে এটি একটি আধ্যাত্মিক কাজ ও মহান অনুষ্ঠান।
এভাবে শয়তান তাদের সঠিক পথ থেকে বাধা দিয়েছে। এজন্য তারা সঠিক পথে ওয়াদাবদ্ধ হবে না। তারা তাদের শিরক ও কুফরির পথে এতটাই বিনিয়োগ করেছে এবং নিমজ্জিত হয়েছে। শয়তানের কারণে তারা এটাকে নিজেদের জন্য আকর্ষণীয় করে তুলেছে, তাই তারা হেদায়েতের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হবে না।
এই আয়াতটি আমাকে বিস্মিত করে, কারণ একটি পাখি এই গভীর বিশ্লেষণ দিচ্ছে! পাখিটি শুধু দেখেনি যে তারা উপাসনা করছে, এটা ফিরে দেখেছে ও রিপোর্ট করেছে যে,
প্রথমত, তারা সূর্যের উপাসনা করছে।
দ্বিতীয়ত, তারা এই অনুষ্ঠানটিকে এতটা সাজিয়েছে যে, সে বলতে পারছে শয়তান এটাকে তাদের কাছে খুব আকর্ষণীয় করে তুলেছে আর তাদেরকে সঠিক পথ খুঁজে পাওয়ার যেকোনো পথরুদ্ধ করে দিয়েছে।
একটি পাখির কাছ থেকে এটা খুবই গভীর অন্তর্দৃষ্টি যে তারা হেদায়েতের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হবে না।
আমি যা বলতে চেষ্টা করছি তা হলো, আল্লাহ এই সমস্ত প্রাণীদের, যাদের ভাষা আমরা বুঝতে পারি না, তাদেরকে যোগাযোগের ক্ষমতা দিয়েছেন। পাখিদের আছে কথা বলার ক্ষমতা, যোগাযোগ করার ক্ষমতা আছে। তারা পরস্পরের সাথে যোগাযোগ করতে পারে।
এই আলোচনাটি আমাদের জন্য জানাচ্ছে, এই প্রাণীদের সবার একটি ভাষা আছে, তাদের সবার মানুষের কর্মকাণ্ড রেকর্ড করার নিজস্ব উপায় আছে। যেমন আপনার পোষা প্রাণী আছে বা আপনি কোনো খারাপ জায়গায় গাড়ি চালিয়ে যাচ্ছেন, একটি পাখি রাস্তার তারে বা স্ট্রিট লাইটে বসে আপনাকে দেখছে, আপনার দিকে তাকিয়ে আছে—এটি একজন সাক্ষী, আপনি যা করেছেন তার বিস্তারিত হিসাব এর কাছে আছে।
শুধু আপনার পাশে থাকা ফেরেশতারাই লিখছেন না, পিঁপড়ারাও আছে, দেয়ালের মাছিও আছে, পাখিরা আছে, বিড়াল আছে, কুকুর আছে—এরা সবাই সাক্ষী। এবং তারা এখন কথা বলতে না পারলেও এর মানে এই নয় যে কিয়ামতের দিন তারা কথা বলবে না। সুবহানাল্লাহ!
এমনকি আমরা যেভাবে প্রাণীদের সম্পর্কে চিন্তা করি আর তারা আমাদের পক্ষে কতটা রেকর্ড করছে, তা শুধু এই আয়াতের কারণে ধারণাই পরিবর্তন করে দেয়। আল্লাহর সম্পর্কে সচেতন হওয়ার জন্য আর কী প্রয়োজন?
এই লোকেরা, যারা সূর্যের উপাসনা করছিল, তাদের কাছে এটা কতটা তুচ্ছ ছিল যে শুধু একটা পাখি উড়ে গেল। আপনি এটা নিয়ে চিন্তাও করলেন না, এটা শুধু একটি পাখি যা উড়ে গেল। অথচ এটা ছিল আল্লাহর পক্ষ থেকে নজরদারি, একজন নবীর কাছে রিপোর্ট করার জন্য নজরদারি।
কিয়ামতের দিন যখন সবকিছু সাক্ষী হয়ে যাবে, সুবহানাল্লাহ, শুধু আমাদের হাত-পা নয়, আমাদের আশপাশের প্রাণীরাও সাক্ষী হবে।
আল্লাহ আমাদের সচেতন করুন এবং আল্লাহর উপস্থিতি ও সকল বিষয়ে আল্লাহর পূর্ণ দৃষ্টি সম্পর্কে আমাদের উপলব্ধি করান, যা তিনি এই সুন্দর উদাহরণগুলির মাধ্যমে আমাদের সামনে তুলে ধরেন।
বই : কুরআনের সৌন্দর্যে অভিভূত
মূল : উস্তাদ নোমান আলী খান
--
এরকম অসাধারণ সব কুরআনের ভাষার প্রজ্ঞা, গভীরতা, বিস্ময় ও মুগ্ধতা নিয়ে উস্তাদ নোমান আলী খানের নতুন বইটি রচিত হয়েছে, আলহামদুলিল্লাহ্।
এই ধরণের বই কেন দরকার? ভালোবাসার জন্য। কী ভালোবাসার জন্য? আল্লাহর কালাম। আপনি যখন কারো প্রজ্ঞার গভীরতা, বিস্ময়, ভালোবাসার অসাধারণ সব কারণ খোঁজে পাবেন, তাঁকে অনুসরণ করতে ও তাঁর কথা ভালোবেসে মেনে চলতে চাইবেন। আমাদের ইবাদত তো মূলত আনুগত্য। তবে এই আনুগত্য সহজ হয়ে যায় কারো প্রজ্ঞা, বিস্ময় ও ভালোবাসার কারণগুলো খোঁজে পেলে। সেই বিস্ময়, মুগ্ধতা ও ভালোবাসাগুলো দেখাবে কুরআনের ভিতরে, সেগুলো উস্তাদ কুরআনের গবেষণা থেকে বিভিন্ন আলেমদের থেকে তুলে এনেছেন।
কুরআনের ভাষাগত মুজিযা (ডিভাইন স্পিচ) এর উপর উস্তাদ নোমান আলী খানের এই অসাধারণ চারটি বই সংগ্রহ করতে পারেন।
১। কুরআনের বিস্ময়কর ভাষাতাত্ত্বিক অলঙ্কার - গঠনগত ডিভাইন স্পিচ
২। উপমার শৈল্পিকতায় মুগ্ধময় কুরআন - ভাষাগত ডিভাইন স্পিচ
৩। কুরআনের সৌন্দর্যে অভিভূত - ভাষা, ভাব ও গঠনগত সৌন্দর্যের ডিভাইন স্পিচ
৪। বিস্ময়কর ফাতিহা - এর শেষ চ্যাপ্টার শুধু সূরা ফাতিহার ডিভাইন স্পিচ নিয়ে, ভাষা ও বিষয়ের ভারসাম্যগত।
বইগুলো আপনার পছন্দের শপ বা নীচের যেকোনো অনলাইন শপ থেকে সংগ্রহ করতে পারেন।
[১] রকমারি : (01519521971) (Whatsapp এ মেসেজ দিয়ে অর্ডার দিন)
[২] ওয়াফিলাইফ : 09678771365
ليست هناك تعليقات:
إرسال تعليق